এবারও হাট কাঁপাতে আসছে ‘মানিক’, কলা খেলেই হয় শান্ত - বাসাইল নতুন সংবাদ ডটকম
|
ads
  • এবারও হাট কাঁপাতে আসছে ‘মানিক’, কলা খেলেই হয় শান্ত






    টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটী ইউনিয়নের ভেঙ্গুলিয়া গ্রামের হামিদা আক্তার বিশাল আকৃতির ষাঁড় (মানিক) গরুসহ তার খামারে ৮টি গরু রয়েছে। গত ৫ বছর ধরে মানিক নামের গরুটি বিক্রির জন্য ক্রেতা খুঁজছেন হামিদা। 


    গত কয়েকবছর ধরে ঈদের হাট কাঁপানোর বিশাল আকৃতির ষাঁড় গরু কলা খেলেই থাকেন শান্ত। মানিকের বয়স ৯ বছর। ঈদুল আযহার সময় ঘনিয়ে আসলেই মানিকের নামটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কয়েক বছর ধরেই সরগরম হয়ে উঠে। এ বছরও পবিত্র ঈদুল আযহার হাট কাঁপানোর জন্য প্রস্তুত বিশাল আকৃতির দেহ নিয়ে মানিক।  




    হামিদা আক্তারের মা বছরখানেক আগে মারা গেছে। বৃদ্ধা বাবা এবং ছোট বোনকে নিয়ে হামিদের সংসার। তারা তিন বোন মেজো বোনটি বিয়ে হয়েছে। 


    প্রতিদিন ষাঁড়টির জন্য খরচ মেটাতে তার হিমশিম খেতে হচ্ছে । ষাঁড় গরুটি দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসছেন। দূর দূরান্ত থেকে ফোন কল আসছে হামিদার কাছে।কত টাকা হলে বিক্রি করবেন তা নিয়ে ফোনে চলে আলোচনা। ষাঁড় গরুটির ওজন প্রায় ২ হাজার কেজির উপরে ।


    গত  ঈদুল আযহার সময় হামিদা তার মানিককে ১৫ লক্ষ টাকা বিক্রি করেছিলেন। যেকোনো কারণবশত বিক্রি করেনি হামিদা। এবছর মানিকের দাম হাকাচ্ছি  প্রায় ২০ লক্ষ টাকা। তবে আলোচনার সাপেক্ষে মানিকের দাম কম বেশি হতে পারে বলে জানা যায় । 


    এদিকে মানিককে গোসল করাতে হয় সাবান এবং শ্যাম্পু দিয়ে। সময়মতো খাবার দিতে হয়। খাবার না দিলেই তার পাগলামকি শুরু করে দেন। তার খাবারের মধ্য রয়েছে বুট এবং ভুসি। এছাড়াও রাতের খাবার তার জন্য রাখা হয়েছে কলা। 



    স্থানীয় রাসেল মিয়া বলেন, গত পাঁচ বছর ধরে কোরবানির হাট কাঁপাচ্ছেন প্রায় ৬০ মন ওজনের মানিক। কাঙ্খিত দাম না পাওয়ায় ষাঁড়টি (মানিক) বিক্রি করতে পারছে না হামিদা আক্তার। 


    এদিকে চাকুরির পিছনে না ঘুরে নারী উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এই বিশাল দেহী ওজনের ষাঁড় গরুটি লালন পালন করছেন হামিদা। এই বিশাল দেহী ষাঁড় গরুটির সাথে রয়েছে আরো সাতটি গরু। এরমধ্যে বিশাল ষাঁড় গরুটি বিক্রির পাশাপাশি আরো দুটি গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন তিনি। এছাড়াও পালে রয়েছে দুটি বকনা গরুসহ দুটি দুধের গরু। 


    ভেঙ্গুলিয়া গ্রামের রফিক সালাম শফিক জানান, এই গ্রামে একজন নারী উদ্যোক্তা হামিদা আক্তার তিনি কয়েকটি গরু লালন পালন করছেন। এরমধ্যে বিশাল আকৃতির একটি ষাঁড় নাম রাখা হয়েছে মানিক। সেই ষাঁড়টি বেশ কয়েক বছর ধরে বিক্রির জন্য ক্রেতা খুঁজছেন। উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় ষাঁড়টি বিক্রি করতে পারছে না। তারা জানান উপযুক্ত দামে বিক্রি করতে পারলে হামিদা আক্তার একজন সফল উদ্যোক্তা হতে পারত। তার স্বপ্ন এই ষাঁড়টি বিক্রি করে একটি খামার গড়ে তুলবেন। তাই সরকারের কাছে আবেদন নিবেদন  জানাই যাতে করে হামিদার গরু বিক্রিতে সার্বিক সহযোগিতাসহ সফল উদ্যোক্ত হওয়ার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন জানাই। 


    এবিষয়ে হামিদা আক্তার বলেন, রাতে যখন ঘুমিয়ে পড়ি ঘুম থেকে জেগে উঠে তাকে বারবার দেখতে হয়। তিনি কিভাবে ঘুমাচ্ছেন। কিভাবে শুয়ে রয়েছেন, কিভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে, তার উপরে ফ্যান চলছে কিনা, নিচে তার ময়লা জমেছে কিনা, সে ব্যাপারে সব সময়ের জন্য সজাগ থাকতে হয়। 


    এই মানিককে নিয়ে যেভাবে পরিশ্রম করছি হয়তো একদিন এই মানিক কে বিক্রি করে দেব। সেদিন মনে পড়বে এই মানিকের কথা। মানিককে যেভাবে আদর স্নেহ দিয়ে লালন পালন করছি সেটি ভোলার মত নয়। মানিকের খাওয়া দাওয়া একটু কষ্ট হলেই অস্থির হয়ে ওঠেন। আর তখনই তার সামনে ধরি কলা। তিনি কলা পেলে শান্ত হয়ে যান। 


    হামিদা আক্তার আরো বলেন, বিশাল আকৃতির ষাঁড় (মানিকের) খাবার ও লালন পালনের পিছনে প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার টাকা খরচ হয়। এই খরচ জোটাতে তার পক্ষে হিমশিম খেতে হয়। 


    ভালো মুনাফার আশায় মানিক রতনসহ কয়েকটি গরু লালন পালন করেন। এরমধ্যে মানিকের জুটি ছিল রতনসহ আরো কয়েকটি সেগুলো বিক্রি করেছি। কিন্তু মানিককে বিক্রি করতে পারেনি।